Monday, November 21, 2022

২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট যেভাবে তৈরি করা হয়েছে

২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট যেভাবে তৈরি করা হয়েছে

২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল যেভাবে তৈরি করা হয়েছেঃ 


• এই বছর পরিক্ষার আয়োজন করা হয়েছে মাত্র ৭ বিষয় কিন্তু রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে ১২ টি বিষয়।


• এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে ৭ টি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হয়েছে। এর সাথে জেএসসি থেকে ৩টি বিষয় নম্বর যোগ করা হবে, তার সাথে শারীরিক শিক্ষা ও ক্যারিয়ার শিক্ষা নম্বর যোগ করে সর্বমোট ফলাফল প্রকাশ করা হবে।


• এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে জেএসসি তে শিক্ষার্থীরা যে নম্বর পেয়েছে এসএসসি তাদের যোগ করা হবে।


• তাছাড়া এইবার শিক্ষার্থীরা ৭টি বিষয় পরীক্ষা দিয়েছে 45, 50 এবং 55 নম্বরে। যা পরবর্তীতে 100 নম্বরের রূপান্তর করা হবে।


• এক্ষেত্রে 45 নম্বর রূপান্তর প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বলা হয়েছে 45 নম্বর 75 নম্বর রূপান্তর করা হবে। এর সাথে ব্যবহারিক খাতা25 নম্বর যোগ করে 100 নম্বরের ফলাফল প্রস্তুত করা হবে।


•  অন্য দিকে যে সকল বিষয় 55 ও 50 নম্বরের পরীক্ষা হয়েছে তা সরাসরি 100 নম্বরের রূপান্তর করা হবে। এক্ষেত্রে মার্কশিট সহ শিক্ষার্থীরা এই ফলাফলগুলো দেখতে পারবে তাদের রেজাল্টের সময়।


• তাছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আরও বলা হয়েছে এই নম্বর রূপান্তর কারণে। এ বছর শিক্ষার্থীরা বেশ ভালো ফলাফল করতে পারবে কারণ এই প্রক্রিয়ায় এ প্লাস এর সংখ্যা অনেক বেশি হবে।


• কতগুলো বিষয়ে এ প্লাস পেলে মূল রেজাল্ট এ প্লাস হবে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে যদি শিক্ষার্থীরা দশটি বিষয়ে মূল ফলাফল প্রকাশ করা হবে সেখানে সাতটি বিষয় প্লাস এবং তিনটি বিষয়ে যদি সে এ গ্রেড পায় তবে ও তার ফলাফল এ প্লাস থাকবে।


• আবার যদি কোনো শিক্ষার্থী 8 টি বিষয়ে এ প্লাস একটি বিষয় এ গ্রেড ও একটা বিষয়ে এ – পায় তা হলেও তার ফলাফল এ প্লাস থাকবে আবার যদি কোনো শিক্ষার্থী নয়টি বিষয়ে প্লাস এবং একটি বিষয়ে সি পায় তাহলেও তার এ প্লাস থাকবে।



কোয়েরি ল্যাংগুয়েজ কী? What is Query Language?

কোয়েরি ল্যাংগুয়েজ কী? What is Query Language?

কোয়েরি ভাষা দিয়ে ব্যাবহারকারী সহজেই ডাটাবেজ হতে তথ্য বা ডাটা আহরণ করতে পারে। ডাটাবেজে ডাটা প্রবেশ করানো, ডাটা রিট্রাইভ করা, ডাটা মডিফাই অথবা ডিলেট করা ইত্যাদি অপারেশনগুলোকে কোয়েরি বলে। যে ল্যাংগুয়েজের সাহায্যে কোয়েরি করা হয় তাকে কোয়েরি ল্যাংগুয়েজ বলে। 

অধিকাংশ ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ডাটাবেজ হতে ডাটা অ্যাকসেস করার জন্য কোয়েরি ল্যাংগুয়েজ ব্যাবহার করে। এটি খুব উচ্চস্তরের ভাষা। এ ভাষা ব্যাবহার কএএ সহজেই ডাটাবেজ হতে ডাটা সার্চ করা, সংগ্রহ করাসহ ব্যাবহারকারীর ইচ্ছানুযায়ি বিভিন্ন ধরনের ক্যালকুলেশন করা সম্ভব। এ ভাষা যেকোন স্টানডার্ড প্রোগ্রামিং ভাষার তিলনায় উচ্ছস্তরের। বর্তমানে মাইক্রো কম্পিউটার SQL এবং QUEL কোয়েরি ল্যাংগুয়েজ ব্যাবহার করা হয়। 

নিম্নে সব চেয়ে জনপ্রিয় ৪ টি কোয়েরি ভাষার নাম লিখা হলো।

  1. Quel (Query Language)
  2. QBE (Query by Example)
  3. SQL (Structure Query Language)
  4. Server SQL
এই চারটি কোয়েরি ল্যাংগুয়েজের মধ্যে SQL সারা বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ANSI-এর স্টানডার্ড অনুযায়ী SQL রিলেশনাল ডাটাবেজের জন্য আদর্শ কোয়েরি ল্যাংগুয়েজ হিসেবে প্রচলিত রয়েছে। 

বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রে আইসিটি

বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রে আইসিটি

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এখন কর্মক্ষেত্রে আইসিটির বহুমুখী প্রভাব ও ব্যাবহার লক্ষা করা যাচ্ছে। এই প্রভাব ও পরিসর ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। কর্মক্ষেত্রে আইসিটির দুই ধরনের প্রভাব লক্ষা করা যায়। প্রথমত প্রচলিত কর্মক্ষেত্রগুলোতে আইসিটির প্রয়োগের ফলে কর্মদক্ষতার বৃদ্ধি এবং বাজার সম্প্রসারণ, অন্যদিকে আইসিটি নিজেই নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে। 

প্রচলিত কর্মক্ষেত্র এবং পুরাতন ব্যাবসা বাণিজ্য আইসিটি ব্যাবহারের ফলে কর্মীদের দক্ষতা, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা বেড়েছে। অন্যদিকে এর ফলে সেবার মানও উন্নত হয়েছে। বর্তমানে দেশের অধিকাংশ চাকরির ক্ষেত্রে আইসিটি ব্যাবহারের সাধারণ দক্ষতা একটি প্রাথমিক যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। 

ব্যাংক, বিমা থেকে শুরু করে বহুজাতিক কোম্পানি, সরকারি দপ্তরে কাজ করার জন্য ওয়ার্ড প্রসেসর থেকে উপস্থাপনা সফটওয়্যার, ইন্টারনেট ব্রাউজিং থেকে ই-মেইল, নানান ধরনের বিশ্লেষণী সফটওয়্যার ইত্যাদিতে দক্ষ হতে হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন বিশেষায়িত সফটওয়্যার (যেমনঃ ব্যাংকিং সফটওয়্যার) ব্যাবহারেরও পারদর্শিতা অর্জন কররে হয়।

অন্যদিকে আইসিটি নিজেই একটি বড় আকারের কর্মবাজার সৃষ্টি করেছে। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি এখন নতুন দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি বিরাট কর্মক্ষেত্র। কেবল দেশে নয়, আইসিটিতে দক্ষ কর্মীরা দেশের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠানে অথবা স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে পারে। এই কাজের একটি বড় অংশ দেশে বসেই সম্পন্ন করা যায়। আউটসোর্সিং করে এখন অনেকেই বাংলাদেশের জন্য মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। 

Saturday, November 19, 2022

সেভেন আপের ইতিহাস | 7up নাম কেন রাখা হলো?

সেভেন আপের ইতিহাস | 7up নাম কেন রাখা হলো?

সেভেন আপ (7up), বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই, কোমলপানীয়গুলোর মধ্যে সেভেনআপের জনপ্রিয়তা সবার শীর্ষে! এছাড়াও বিশ্বকাপ আসলেই সবার মাথায় চেপে বসে, গোল হলে ৭ টাই হতে হবে নাইত যে সেভেন আপ হবে না! কেউ যদি কোন টিমকে ৭ টি গোল দেয় তাহলে তাদেরকে মজা করে বলা হয় সেভেন আপ! তো এই যে এতদিকে শুধু সেভেন আপ সেভেন আপ, আসলে আমাদের মধ্যে কয়জনই বা জানে এই সেভেন আপের ইতিহাস সম্পর্কে? সেভেন আপ সম্পর্কে আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত জানানো হবে এবং সেই সাথে জানাবো এর নাম সেভেন আপ কেন রাখা হলো? তাহলে চলুন জেনে নেই সেভেন আপের ইতিহাস!

চার্লস লিপার গ্রিগ

১৮৬৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যে জন্ম তার। প্রাপ্ত বয়স্ক হলে সেন্ট লুইসে (Sent Louis) চলে যান তিনি। এবং ঐখানে গিয়ে কাজ শুরু করেন এডভার্টাইজিং এবং সেলস সেক্টরে। সে সময় কোমল পানীয়র সাথে পরিচয় হয় গ্রিগের। 

১৯১৯ সালে Vess Soda company এর মালিকানাধীন এক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে চাকরি করছিলেন গ্রিগ! সেখানে থাকাকালীন Jenkinson এর এক ফার্মের জন্য গ্রিগ উদ্ভাবন করেন অরেঞ্জ ফ্লেভারের এক কোমল পানীয়! আর তার নাম রাখা হয়েছিলো হুইসেল (Whistle). বাজারযাতও করা হয় সেটা কিন্তু পরবর্তীতে মেনেজমেন্টের কোন এক ঝামেলার কারণে সেখান থেকে চলে আসেন গ্রিগ আর রেখে আসেন তার বানানো হুইসেল (Whistle).

এরপর তিনি যোগ দেন Warner Jenkinson Company তে সেখানেও কোমলপানীয়র ফ্লেভার নিয়ে কাজ করতে থাকেন। সেখানে কাজ করার সময়ই গ্রিগের হাত ধরে আসে দ্বিতীয় কোমলপানীয় হাউডি (Howdy) পরবর্তীতে যখন গ্রিগ Warner Jinkinson থেকে চলে আসেন তখন আর আগের ভুলটা করেনি, তিনি এবারে তার বানানো হাউডির সকল ধরনের সত্ত নিয়ে আসেন। 

ততদিনে গ্রিগ বুঝতে পারছিলেন তার মাধ্যমে কোমল্পানীয় ইন্ডাস্ট্রিতে খুব বড় কিছু করা সম্ভব! এবং এই চিন্তা মাথায় আসার পর গ্রিগ একজন অর্থলগ্নিকারী খুজে নিলেন। যার নাম ছিলো এডমুন্ড জি. রিজওয়ে। ততদিনে তিনি ২ টা অরেঞ্জ ফ্লেভারের কোমলপানীয় নিয়ে মার্কেটে থাকা ততকালীন কোমল পানীয় জায়ান্ট Crush Orange বা অরেঞ্জ ক্রাশের সামনে ঠিক কুলে উঠতে পারছিলেন না। তাই তিনি এদিকে আর মন না দিয়ে মাতলেন লেমন লাইম সোডা নিয়ে। 

১৯২৯ সালের অক্টোবর মাসে অবশেষে সফলতার মুখ দেখলেন গ্রিগ। উদ্ভাবন করলেন এক নতুন কোমলপানীয়র ফর্মুলা, যার না দিলেন Bib-Label Lithiated Lemon-Lime Soda! অল্প কিছুদিন পরেই এর নাম পালটে ওটা হয়ে গেলো Seven Up Lithiated Lemon Soda. অবশেষে ১৯৩৬ সাল থেকে এটা হলো কেবলই সেভেন আপ (7up).

সেভেন আপের (7up) একেবারে মূলফর্মুলার একটি উপাদান ছিলো লিথিয়াম সাইট্রিক। সে সময় ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় ব্যাবহৃত হত এটি। পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালে মার্কিন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে কোমলপানীয়তে এই উপাদানের ব্যাবহারে নিষেধাজ্ঞা ঝারী হয়। ফলে আলাদা হয়ে যায় সেভেন আপ ও লিথিয়াম সাইট্রেকের চলার পথ। Calsium, Disodium, UDTA  এর উপাদানের তালিকা থেকে সরিয়ে নেইয়া হয় ২০০৬ সালে। ঐদিকে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে সোডিয়াম সাইট্রিকের বদলে যোগ করা হয় Potassium Citrate.

এখন প্রশ্ন হলো

সেভেন আপ নাম কেন দেওয়া হলো?

সেভেন আপ নাম কেন সেওয়া হলো? বিশস্ত কি এই নামের? দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে গ্রিগ কোনোদিনি খোলাসা করেন নি এই ব্যাপারে। ফলে এই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য রয়েছে। 

যার মধ্যে সবাই বিশ্বাস করেন এবং বিশেষজ্ঞরাও দ্বারনা করেন সেভেন আপ তৈরি করা হয়েছিলো ৭ টি উপাদান দিয়ে, সে গুলো হলো চিনি, কার্বোনেটেড ওয়াটার, লেমন ও লাইম, অয়েলেএ নির্যাস, সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম এবং লিথিয়াম সাইট্রেট। আর এই পানীয়টির বাবল উপর দিকে উঠার কারণেই এর নাম রাখা হয় 7up! 

কিছু বিশেষজ্ঞরা আবার বলেন সেভেন আপ যখন প্রথম বাজারে আসে তখন এটা মোট সাটটি সাইজের বোতলে করে বাজারজাত করা হতো, তাই এর নাম করণ করা হয় সেভেন আপ। 

আবার অনেকেই বলে অত্যাধিক নেশার ফলে ৭ ধরনের জিনিস কাটাতে সাহায্যে করবে সেভেন আপ, এমনটাই একবার দাবী করেছিলেন গ্রিগ। তবে গ্রিগ কথাটি সিরিয়াসলি বলেন নি। 

এছাড়াও আরো অনেক ধরনের কথা শুনা যায় যেই কারনে এর নাম সেভেন আপ। আপনার মতে কি বলে? সেভেন আপ নাম কেন রাখা হয়েছে?

Friday, November 18, 2022

সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি কতটা নিরাপদ? সামাজিক নেটওয়ার্কে আসক্তি

সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি কতটা নিরাপদ? সামাজিক নেটওয়ার্কে আসক্তি

মানুষ সামাজিক প্রাণী এবং মানুষের নিজেদের ভেতর সবসময়েই একধরনের সামাজিক যোগাযোগ ছিল। কিন্তু ইদানীং সামাজিক যোগাযোগের কথা বলা হলে সেটি মানব সভ্যতার সেই চিরন্তন সামাজিক যোগাযোগ বা সামাজিক নেটওয়ার্কের কথা না বুঝিয়ে ইন্টারনেট-নির্ভর সম্পুর্ন ভিন্ন এক ধরনের নেটওয়ার্কের কথা বোঝানো হয়। 

ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, লিংকডইন, টিকটক, লাইকি এ ধরনের অনেক সামাজিক যোগাযোগ সাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে যেগুলোতে মানুষ নিজেদের পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারে। এক সময় এই সাইটগুলো ছিল কম বয়সী তরুন-তরুণীদের জন্যে, এখন সব বয়সী মানুষই সেটি ব্যাবহার করে। শুধু যে একে অন্যের সাথে যোগাযোগের জন্য এটি ব্যাবহার করে তা নয়, একটা বিশেষ আদর্শ বা মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যেও এটি ব্যাবহার করা হয়। যে উদ্দেশ্যে এটি শুরু হয়েছিল যদি এটি সেই উদ্দেশ্যে মাঝে সীমাবদ্ধ থাকত তাহলে এটি কোনো সমস্যার জন্ম দিত না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি সামাজিম যোগাযোগ সাইটে আসক্তি ধীরে ধীরে সারা পৃথিবীর জন্যেই একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়ে যেতে শুরু করছে।

মনোবিজ্ঞানীরা এটা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন এবং এখন এটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত বলা যায় এই সাইটগুলোর সাফল্য নির্ভর করে, সেগুলো কত দক্ষতার সাথে ব্যাবহারকারীদের আসক্ত করতে পারে। পুরো কর্মপদ্ধতির মাঝেই যে বিষয়টি রয়েছে সেটি হচ্ছে কত বেশিবার এবং কত বেশি সময় একজনকে এই সাইটগুলতে টেনে আনা যায় এবং তাদেরকে দিয়ে কোনো একটা কিছু করানো যায়। যে যত বেশিবার এই সাইট ব্যাবহার করবে সেই সাইটটি তত বেশি সফল হিসেবে বিবেচিত হবে এবং অবশ্যই সেটি তত বেশি টাকা উপার্জন করবে। কাজেই কেউ যদি অত্যান্ত সতর্ক না থাকে তাহলে তার এই সাইটগুলোতে পুরোপুরি আসক্ত হয়ে যাবার খুব বড় আশঙ্কা রয়েছে। 

মনোবিজ্ঞানীরা এই সাইটগুলো বিশ্লেষণ করে আরো একটি কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় আবিষ্কার করেছেন। সব মানুষের ভেতরেই নিজেকে প্রকাশ করার একটা ব্যাপার রয়েছে কিংবা নিজেকে নিয়ে মুগ্ধ থাকার এক ধরনের সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা থাকে, সেটাকে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় Narcissism বলে। সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে মানুষের এই সুপ্ত বাসনাকে জাগ্রত করে দেয়। 

সবার ভেতরেই তখন নিজেকে জনপ্রিয় করে তোলার এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। জেনে হোক না জেনে হোক ব্যাবহারকারীরা নিজের সম্পর্কে অত্যান্ত তুচ্ছ খুঁটিনাটি তথ্য সবার সামনে উপস্থাপন করতে থাকে, কেউ সেটি দেখলে সে খুশি হয়, কেউ পছন্দ করলে আরো বেশি খুশি হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি অনেকটা আসক্তির মতো কাজ করে এবং একজন ব্যাবহারকারী ঘন্টার পর ঘন্টা এই যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের সময় অপচয় করতে থাকে। 

সামাইম যোগাযোগের এই আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণে সারা পৃথিবীতে অনেক সময়ের অপচয় হচ্ছে।

Thursday, November 17, 2022

কম্পিউটার গেমে আসক্তি | কম্পিউটার গেম খেলা কত টুকু নিরাপদ?

কম্পিউটার গেমে আসক্তি | কম্পিউটার গেম খেলা কত টুকু নিরাপদ?

কম্পিউটার গেমে আসক্তিটা প্রায় সময়েই শুরু হয় শৈশব থেকে এবং বেশিরভাগ সময়ই সেটা ঘটে অভিভাবকদের আজ্ঞতার কারণে। কম্পিউটার একটা Tool এবং এটা দিয়ে নানা ধরনের কাজ করা যেতে পারে। এই প্রযুক্তি সম্পর্কে এত সুন্দর সুন্দর কথা বলা হয়েছে যে অনেক সময়ই অভিভাবকরা ধরে নেন এটা দিয়ে যা কিছু করা হয় সেটাই বুঝি ভালো, তা তখন যখন ত্রা দেখেন তাদের সন্তানেরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে আছে তারা বুঝতে পারেন না তার মাঝে সতর্ক হওয়ার ব্যাপার রয়েছে। 

কম্পিউটার গেম এক ধরনের বিনোদন এবং এই বিনোদনের নানা রকন মাত্রা রয়েছে। যারা সেটি খেলছে তারা সেটাকে নিছক বিনোদন হিসেবে মাত্রার ভেতরে ব্যাবহার করলে সেটি যেকোনো সুস্থ বিনোদনের মতই হতে পারে। কিন্তু প্রায়ই সময় সেটি ঘটেনা। দেখা গেছে একটি ছোট শিশু থেকে পুর্ন বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত সবাই কম্পিউটার গেমে আসক্ত হয়ে যেতে পারে।

কোরিয়ায় একজন মানুষ টানা পঞ্চাশ ঘন্টা কম্পিউটার গেম খেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেছিল। চীনের এক দম্পতি কম্পিউটার গেম খেলার অর্থ জোগাড় করতে তাদের শিশু সন্তানকে বিক্রয় করে দিয়েছিল। এই উদাহরণগুলো আমাদের মনে করিতে দেয় কম্পিউটার গেমে আসক্ত হয়ে যাওয়া মোটেও বিচিত্র কিছু নয়। এবং একটু সতর্ক না থাকলে একজন খুব সহজেই আসক্ত হয়ে যেতে পারে। 

কম্পিউটার কিংবা কম্পিউটার গেমে আসক্তির বিষয়টা যেহুতু নতুন, তাই সেগুলো নিয়ে গবেষণা এখনো খুব বেশি হয়নি। কিন্তু ভবিষ্যতে পুরো বিষয়টি নিয়ে গবেষকরা আরো নিশ্চিতভাব্ব দিক-নির্দেশনা দিতে পারবেন। এখনই গবেষণায় দেখা গেছে কোনো একটা কম্পিউটার গেমে তীব্রভাবে আসক্ত একজন মানুষের মস্তিষ্কে বিশেষ উত্তেজক রাসায়নিক দ্রব্যের আবির্ভাব হয়। শুধু তাই নয় যারা সপ্তাহে আন্তত ছয় দিন টাকা দশ ঘন্টা করে কম্পিউটার ব্যাবহার করে তাদের মস্তিষ্কের গঠনেও এক ধরনের পরিবর্তন হয়ে যায়। 

কএই কম্পিউটার গেম চমৎকার একটা বিনোদন হতে পারে, কিন্তু এতে আসক্ত হওয়া খুব সহজ এবং তার পরিণতি মোটেও ভালো নয়। সেটা সবাইকে মনে এয়াখতে হবে। 

পাইরেসি কি? What is Piracy?

পাইরেসি কি? What is Piracy?


লেখক, শীল্পিসহ সৃজনশীল কর্মীরা তাদের নিজেদের সৃষ্টকর্মকে সংরক্ষন করার অধিকার দেওয়া কপিরাইট আইনের লক্ষ্য। সাধারণতভাবে একটি মুদ্রিত পুস্তকের কপিরাইট ভংগ করে সেটি পুণর্মুদ্রণ করা যথেষ্ট ঝামেলাপূর্ন এবং ব্যায়বহুল। কিন্তু কম্পিউটারের বেলায় যেকোন কিছুর 'কপি' বা 'অবিকল প্রতিলিপি' তৈরি করা খুবই সহজ কাজ। এজন্য এমনকি বিষেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন পরেনা। এ কারণে কম্পিউটার সফটওয়্যার, কম্পিউটারে করা সৃজনশীল কর্ম যেমন ছবি, এনিমেশন, ভিডিও ইত্যাদির বেলায় কপিরাইট সংরক্ষনে বাড়তি ব্যাবস্থতা নিতে হয়। যখনই এরুপ কপিরাইট আইনের আওতায় কোনো কপিরাইট হোল্ডারের অধিকার ক্ষুগ্ন হয় তখনই কপিরাইট বিঘ্নিত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। এই ধরনের ঘটনাকে সাধারণভাবে পাইরেসি বা সফটওয়্যার পাইরেসি নাম্ব অভিহিত করা হয়। 

পাইরেসি কি

কপিরাইট আইনের আওতায় সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা, নির্মাতা বা প্রোগ্রামার তাদের কম্পিউটার সফটওয়্যারের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ করতে পারেন। ফলে, তাদের অনুমতি ব্যাতীত ঐ সফটওয়্যারের প্রতিলিপি করা বা সেটির পরিমার্জন করে নতুন কিছু সৃষ্টি করা আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ্য হয়ে যায়। ফলে, কপি বা নতুন সৃষ্টির আইনগত ভিত্তি আর থাকে না। কম্পিউটার সফটওয়্যারের পাইরেসি সোজা হলেও বিশ্বব্যাপী পাইরেসির প্রকোপ খুব বেশি একথা বলা যায় না।

সফটওয়্যার পাইরেসি কি

বড় বড় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো তাদের মেধাসত্ব সংরক্ষণ ও বিশ্বব্যাপী পাইরেসি নজরদারি করার জন্য বিজন্বস সফটওয়্যার এলায়েন্স (BSA) নামে একটি সংস্থা তৈরি করেছে। সংস্থাটির ২০১১ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যাবহারকারীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনই পাইরেসিমুক্ত। যেহুতু সফটওয়্যার  পাইরেসি খুবই সহজ, তাই এর হিসাব করাটা কঠিনই বটে। বাংলাদেশেও সফটওয়্যার পাইরেসি নিষিদ্ধ।

পাইরেসি কি, এক কথায় পাইরেসি মানে চুরি 

Tuesday, November 15, 2022

ম্যানুয়াল ডাটা প্রসেসিং এবং কম্পিউটার দিয়ে ডাটা প্রসেসিং এর মধ্যে পার্থক্য

ম্যানুয়াল ডাটা প্রসেসিং এবং কম্পিউটার দিয়ে ডাটা প্রসেসিং এর মধ্যে পার্থক্য

কোন প্রকার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া শুধুমাত্র হাতে কলমে ডাটা প্রসেসিং করাকে ম্যানুয়াল ডাটা প্রসেসিং বলে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ক্যালকুলেটরের বাটন চেপে হাতে কলমে লিখে যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ ইত্যাদি করে ফলাফল তৈরি হয়। এতে সময় বেশি লাগে এবং ভূল হবার সম্ভবনা থাকে।

অন্যদিকে কম্পিউটারের কী বোর্ডের সাহায্যে অতিদ্রুত গতিতে সর্বাপেক্ষ কম সময়ে এবং নির্ভুলভাবে ডাটা প্রসেসিং করা যায়। 

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে ম্যানুয়াল ও কম্পিউটার দিয়ে করা ডাটা প্রসেসিং এর মধ্যে থাকা তুলনামূলক পার্থক্য জানাবো।

কজের গতি ও সময়

উপাত্ত সংগ্রহ থেকে শুরু করে ইনপুট প্রদান পর্যন্ত কাজগুলো মানুষকেই করতে হয়। খাতা কলমে লিপিবদ্ধ করে অথবা সরাসরি কম্পিউটারের কী বোর্ডের সাহায্যে টাইপ করে, অর্থাৎ এই অংশটুকু ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই করতে হয়। ফিল্ড ইনপুট হিসেবে পাওয়া উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের কাজ মানুষ হাতে কলমে করলে সে সময় লাগে, কম্পিউটারের সাহায্যে সেই কাজ তুলনামূলকভাবে নামমাত্র সময়ে সম্পন্ন করা যায়। উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের কাজ কম্পিউটার অত্যান্ত দ্রুত গতীতে করতে পারে। যা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে কম্পিউটারের সাহায্যে উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণে অনেক কম সময় লাগে।

উপাত্ত সংরক্ষণ

প্রক্রিয়াকরনের কাজ শুরু করার আগে সংগৃহীত উপাত্ত কাজগে লিপিবদ্ধ অবস্থায় সংরক্ষন করলে কাগজে অনেক বড় স্পতুপ তৈরি হতে পারে। এই বিপুল পরিমাণ কাগজ সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে রাখা এবং ব্যাবহার করা শ্রমসাধ্য এবং অত্যান্ত কঠিন কাজ। কিন্তু সকল উপাত্ত কম্পিউটারের মেমরিতে রাখলে সংরক্ষণের জন্য আর কোন কষ্ট করতে হয়না।  আবার কাগজপত্র ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভবনাও থাকে। কিন্তু কম্পিউটারের উপাত্ত সংরক্ষন করলে বছরের পর বছর একই রকম থাকে। তবে ভালো মানের হার্ড ডিস্ক ও এসএসডি যত্ন সহকারে ব্যাবহার করা উচিত। 

ক্লামতিহীনতা

মেনুয়্যালি ডেটা প্রসেসিং করতে যেমন অনেক বেশি সময় লাগে তেমনি মানুষ অতি অল্প সময়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ফলে কাজের গতি মন্থর হয়ে যায়। কিন্তু কম্পিউটার ঘন্টার পর ঘন্টা ক্লান্তহীনভাবে ডাটা প্রসেসিংয়ের কাজ করে যেতে পারে।

কাজের পুনরাবৃত্তি

একই কাজ ম্যানুয়ালি বার বাবার করতে মানুষ যেমন ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে যায়, তেমনি তাতে ভূল হবার সম্ভবনাও বাড়তে থাকে। অর্থাৎ ম্যানুয়াল কাজের পুনরাবৃত্তি একটা ঝামেলাপুর্ন বিরক্তিকর কাজ। কিন্তু কাজের পুনরাবৃত্তিতে কম্পিউটারের কোন অসুবিধা নেই। 

ভুল শনাক্তকরণ ও সংশোধন

যেকোম উপাত্তেই ভুল থাকতে পারে, মানুষ যেসব ভুল নিজ চোখে খুজে বের করে ব্যাবহারকারীর দেয়া নির্দেশ অনুযায়ী খুব সহজে ভুল শনাক্ত করতে পারে এবং তা সংশোধন করতে পারে।

যাচাইয়ের মাধ্যমে ভুল শনাক্তকরণ ও সংশোধন

মানুষ নিজের বুদ্ধি বিবেচনার দ্বারা অনেক নতুন তথ্য উদঘাটন করতে পারে, কিন্তু কম্পিউটার তাকে দিয়ে দেওয়া বুদ্ধি বাইরে কোন কিছু তৈরি করা লাভ করতে, ভুল করতে, কিংবা সংশোধন করতে পারেনা। অর্থাৎ বুদ্ধি ও নতুনত্ব সৃষ্টির ব্যাপারে ম্যানুয়াল কাজ করা কম্পিউটারে কাজের চেয়ে লাভজনক। কিন্তু দক্ষতার বিচারে কম্পিউটারে ম্যানুয়াল ডাটা প্রসেসিং এর চেয়ে অনেক এগিয়ে। 
 
রূহ আফজার ইতিহাস |  রুহ আফজা ও হামদর্দ ইতিহাস

রূহ আফজার ইতিহাস | রুহ আফজা ও হামদর্দ ইতিহাস



রূহ আফজা বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানেও জনপ্রিয় পানীয় গুলোর মধ্যে একটি। বিশেষ করে রমজান মাস আসলেই বাংলাদেশের মুদি দোকান থেকে শুরু করে ঔষধের দোকানেও পাওয়া যায় লাল রঙের এই পানীয়টি। বর্তমানে শর্বত হিসেবে পান করা হলেও ১০০ বছরেরও বেশি ঐতিহ্যবাহী এই পানীয়টি একটা সময় ইউনানি মেডিসিন হিসেবে ব্যাবহার করা হতো। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে জানাবো রুহ আফজার ইতিহাস সম্পর্কে! 

রূহ আফজার ইতিহাস

বাংলাদেশে রূহ আফজা বেশ জনপ্রিয় একটি পানীয় হওয়া সত্তেও অনেকেই হয়ত জানেনা যে রূহ আফজা প্রস্তুত কারক আদতে Hamdard বাংলাদেশ। অনেক দীর্ঘ সময় ধরে দেশেই রূহ আফজা ম্যানুফ্যাকচার করা হলেও মার্কেটিংয়ে তেমন বিশেষত্ব দেখা যায়না বিধায় অনেকেরই মনে হতে পারে এটি বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান। 

যদিও রুহ আফজা এবং  Hamdard এর ইতিহাস বাংলাদেশ, ভারত কিংবা পাকিস্তানের চেয়েও পুরোনো! হামদর্দের (Hamdard) শুরুটা হয়েছিলো মূলত ভারতের দিল্লিতে। হামদর্দের প্রতিষ্ঠাতা Hakim Hafiz Abdul Majeed এর জন্ম ১৮৮৩ সালে ততকালীন ভারতের পেরিফেটে। শিক্ষাজীবনের শুরুতে আব্দুল মজীদ (Abdul Majeed) পবিত্র কোরআন সম্পুর্ন মুখস্ত করেন এবং পরবর্তীতে উর্দু ও ফরাসি ভাষা শেখায় মনানিবেশ করেন। ভাষা সম্পর্কীত জ্ঞান অর্জনের পর উচ্চ শিক্ষা হিসেবে তিনি সে সময় ইউনানী চিকিৎসার উপর সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেন।

পরাশোনা শেষে ১৯০৬ সালে হাফিজ আব্দুল মজীদ ততকালীন পুরোনো দিল্লিতে স্বাধারন জনগনকে ইউনানী চিকিৎসা দেওয়ার জন্য Hamdard নামে একটি ছোট ইউনানি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন। 

হামদর্দ শব্দটি মূলত  ফরাসি শব্দ হাম এবং দর্দ এই ২ টি সব্দের সমন্বয় গঠিত। যার অর্থ ব্যাথার সহোযোগি। সে সময় তিনি বিভিন্ন ইউনানি ঔষধের সাহায্যে রোগীদের নানাধরনের রোগের চিকিৎসা করতেন এবং এর পাশাপাশ নিজেই নানা রোগের ভেষজো ও ইউনানি ঔষধ তৈরি করতেন। এ ধরনের ঔষধ তৈরি করতে গিয়েই ১৯০৭ সালে হাকিম হাফিজ আব্দুল মাজিদ নানা ধরনের ভেশজো ও ফলের মিশ্রণে একটি নতুন সিরাপ তৈরি করেন, যার নাম দিয়েছিলেন রুহ আফজা। 

ঘন লালা রঙের এই সিরাপটি তিনি মূলত Heat Stroke, Dehydration ও Diarrhea এর মত রোগের চিকিৎসার জন্য একটি ইউনানি ঔষধ হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন।  যদিও ঠান্ডা পানি বা দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে বেশ সুস্বাদু এবং গরমকালে ক্লান্তি দূর করতে ততকালীন ভারত বর্ষে বেশদ্রুতই শর্বত হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠে সিরাপটি। যার পরিপ্রেক্ষিতে হাফিজ আব্দুল মাজিদ তার এই পণ্যটিকে প্রোপার চ্যানেলে মার্কেটিং এর সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯১০ সালে মির্জানুর আহমেদ নামে একজনকে নিয়ে রূহ আফজার লোগো ডিজাইন করিয়ে নেন। তবে ততকালীন দিল্লির প্রিন্টিং প্রেস গুলো ততখানী এ্যাডভান্স না হওয়ায়, ফুল কালার কন্ট্রাস ঠিক রেখে তা প্রিন্ট করা যাচ্ছিলোনা বিধায় তারা প্রিন্টিয়ের কাজটি বম্বে থেকে করিয়ে আনেন। বিভিন্ন মার্কেটিং এক্টিভিটির কারনে  রূফ আফজা নামটি সহজেই সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে যায়, এবং পন্যটি স্বাদ ও মানের দিক থেকেও ভালো হওয়ায় বেশ দ্রুতই এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। 

বিশেষ করে ১৯১৫ সালে নাগাদ ততকালীন দিল্লির মুস্লিম কমিউনিটিতে রূহ আফজা বেশ ডমিনেট হয়ে উঠে।

কিন্তু রূহ আফজার এরূপ জনপ্রিয়তা হাফিজ আব্দুল মাজিদ দেখে যেতে পারেনি। ১৯২২ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি মৃত্যু বরন করেন।  



Coming Soon...

Monday, November 14, 2022

Netflix এর ইতিহাস

Netflix এর ইতিহাস

Netflix হলো এক ধরণের সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক স্ট্রিমিং সার্ভিস, যা সাবস্ক্রাইবড সদস্যদের ইন্টারনেট-সংযুক্ত ডিভাইসে বিজ্ঞাপনহীনভাবে টিভি শো ও সিনেমা দেখতে দেয়। নেটফ্লিক্সে আপনি বিভিন্ন মুভি, টিভি শো, ডোকুমেন্টরি ভিডিও ইত্যাদি সাবস্ক্রিবশনের মাধ্যমে দেখতে পারবেন। তবে আদতে নেটফ্লিক্স কিভাবে প্রতিষ্ঠা হলো? জানাবো আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে।

নেটফ্লিক্স এর ইতিহাস

১৯৯৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়াতে Reed Hasting ও Marc Randolph নামে দুইজন এন্টারপ্রেনার নেটফ্লিক্স (NETFLIX) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে মাত্র ৩০ জন কর্মচারী এবং ৯২৫ টি ডিভিডি (25 DVD) নিয়ে মুভি রেন্টাল সার্ভিস হিসেবে যাত্রা শুরু করে Netflix. যেটি ছিলো বিশ্বের প্রথম অনলাইন ডিভিডি রেন্টাল সার্ভিস।

ইউজাররা নেটফ্লিক্সের ওয়েবসাইট থেকে মুভি অর্ডার করত, দেখা শেষ হলে আবার তা মেইলের মাধ্যমেই ফেরত দিয়ে দিত। স্বাধারনত রেন্টাল কোস্ট ধরা হতো 4$ এবং পোস্টেড চার্জ 2$। 

সে সময় USA তে সব চেয়ে বড় ভিডিও রেন্টাল সার্ভিস ছিলো "BLOCKBUSTER". প্রায় ৯ হাজারটি ভিডিও রেন্টাল শোপ ছিলো তাদের। যদিও পরবর্তীতে নেটফ্লিক্সের সাথে পেরে উঠতে পারেনি তারা। 

Netflix  এর Reed Hastings বলেন, তিনি ব্লকবাস্টার থেকে একটি Apollo13 এর DVD রেন্টে এনে সময় মত ফেরত দিতে ব্যার্ত হওয়ায় তাকে 40$ ফাইন করা হবে। সেই জন্য তিনি নেটফ্লিক্সের ক্ষেত্রে DVD রেন্টে নেওয়ার পর তা ফেরত দেওয়ার কোন সময়সীমা দেন নি। তবে নতুন একটি DVD নিতে হলে আপনাকে পুরোতনটি ফেরত দিতে হতো। 

১৯৯৯ সালে নেটফ্লিক্স তাদের প্রথম সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস চালু করেন। যার মাধ্যনে ইউজাররা একটি মান্থলি প্যাকেজের আহতায় আনলিমিটেড DVD ভাড়া নিতে পারত। 

২০০০ সালে নেটফ্লিক্সের ইউজার সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে যায়। সে সময় নেটফ্লিক্স ব্লকবাস্টারকে ৫০ মিলিয়ন ডলার প্রস্তাব দেয় তাদের সার্ভিসটি কিনে নেওয়ার জন্য, যদিও তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় ব্লোকবাস্টার! কিছুদিন পর নেটফ্লিক্স পার্সোনালিজ মুভি রিকোমেন্ডেশন সিস্টেম নিয়ে আসে। যার মাধ্যমে ইউজারদের রেটিং এর উপর নির্ভর করে মুভি রিকোমেন্ড করা হতো। 

২০০২ সালে নেটফ্লিক্সকে পাবলিক করা হয়। এবং সে বছরের শেষ পর্যন্ত নেটফ্লিক্সের রেজিস্ট্রেড ইউজার সংখ্যা গিয়ে দারায় ৮ লাখ ৫৭ হাজারে! তার পরের বছরই (২০০৩) নেটফ্লিক্স ১ মিলিয়ন সাবস্ক্রিপশনের মাইল ফলকে পৌছায়। তবে একই বছর নেটফ্লিক্সের কো-ফাউন্ডার, মার্ক রেন্ডাফ নেটফ্লিক্সে তার মালিকার অংশ ছেড়ে দেন।

২০০৩ অর্থবছরে নেটফ্লিক্স প্রথমবারের মত প্রফিটের মুখ দেখে। সে বছর তাদের প্রফিট ছিলো ৬.৫ মিলিয়ন ডলার। এবং রেভিনিউ ছিলো ২৭২ মিলিয়ন ডলার। 

২০০৫ সালে নেটফ্লিক্সের কালেকশনে প্রায় ৩৫,০০০ মুভি ছিলো। এবং প্রতিদিন তারা গড়ে ১ মিলিয়ন ডিভিডি শিপিং করছিলো। 

২০০৬ সালে এসে নেটফ্লিক্সের ইউজার সংখ্যা ৫ মিলিয়নে পৌছায়! সে সময় ব্লকবাস্টারের আউটলেটে ডিভিডি রেন্টাল সার্ভিস থাকলেও নেটফ্লিক্স তাদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে ছিলো। কেননা নেটফ্লিক্স তাদের সার্ভিসটি অনলাইনে অফার করতে পারছিলো। কিন্তু ব্লকবাস্টার থেকে ডিভিডি আনতে হলে আপনাকে তাদের আউটলেটে ভিজিট করতে হতো। আবার ব্লকবাস্টারের তুলনায় নেটফ্লিক্সের কাছে অনেক বেশি মুভি কালেকশন ছিলো।

বেশ কিছুদিন ধরে ডিভিডি রেন্টাল দিয়ে এন্টারটেইনমেন্ট মার্কেট ডমিনেট করার সত্তেও নেটফ্লিক্স বুঝতে পারছিলো যে ভবিষ্যতে স্ট্রিমিং সার্ভিসই সবার চাহিদার শীর্ষে থাকবে।