Showing posts with label What is. Show all posts
Showing posts with label What is. Show all posts

Monday, October 7, 2024

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বানাবো - যোগ্যতা, খরচ, এবং ব্যবহারের নিয়ম

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বানাবো - যোগ্যতা, খরচ, এবং ব্যবহারের নিয়ম

ক্রেডিট কার্ড হলো একটি অত্যন্ত দরকারী আর্থিক সেবা, যা বিভিন্ন সময়ে জরুরি বা প্রয়োজনীয় ব্যয়ের সময়ে সহায়ক হতে পারে। অনেকেই জানেন না কীভাবে একটি ক্রেডিট কার্ড তৈরি করতে হয় বা তার জন্য কী কী প্রয়োজন। এই প্রবন্ধে, আমরা ধাপে ধাপে ক্রেডিট কার্ড তৈরি করার প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বানাবো - যোগ্যতা, খরচ, এবং ব্যবহারের নিয়ম

ক্রেডিট কার্ড কী এবং এর সুবিধা

ক্রেডিট কার্ড একটি আর্থিক সুবিধা, যা ব্যবহারকারীকে একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত টাকা খরচ করার অনুমতি দেয়, যা পরে ধার হিসেবে পরিশোধ করতে হয়। এটি কেনাকাটা, বিল পরিশোধ এবং অনলাইন লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা যায়। প্রধান সুবিধাগুলি হলো:

  • জরুরি ব্যয়ের সময় তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা।
  • EMI সুবিধায় বড় কেনাকাটা।
  • বিভিন্ন রিওয়ার্ড পয়েন্ট এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা।

ক্রেডিট স্কোর উন্নতির সুযোগ, যা ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক।

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। প্রতিটি ব্যাংকের জন্য যোগ্যতার শর্ত কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণত নিম্নলিখিত শর্তগুলো প্রযোজ্য:

  • বয়স: সাধারণত ১৮-২১ বছর বয়সের উপরে হতে হবে।
  • আয়: নির্দিষ্ট একটি মাসিক আয়ের সীমা থাকতে হবে।
  • ক্রেডিট স্কোর: ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ক্রেডিট স্কোরের উপরে থাকতে হবে।
  • চাকরি: নির্দিষ্ট আয়শীল চাকরি বা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে।

ক্রেডিট কার্ড এর জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ক্রেডিট কার্ড আবেদন করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। সাধারণত এই ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হয়:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট: প্রমাণ হিসেবে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে।
  • ঠিকানার প্রমাণ: বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট, যা আপনার ঠিকানা প্রমাণ করবে।
  • আয়ের প্রমাণ: বেতন স্লিপ, আয়কর রিটার্নস, বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
  • একটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

ক্রেডিট কার্ড তৈরির ধাপ

১) ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন

প্রথমে আপনাকে একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে যারা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। আপনি আপনার চাহিদা এবং সুবিধা অনুযায়ী ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান বেছে নিতে পারেন।

২) ক্রেডিট কার্ডের ধরন নির্বাচন

প্রতিটি ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড অফার করে, যেমন স্ট্যান্ডার্ড, প্রিমিয়াম, গোল্ড বা প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড। আপনাকে আপনার আয়ের ভিত্তিতে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কার্ডের ধরন বেছে নিতে হবে।

৩) অনলাইনে বা সরাসরি আবেদন

আপনি অনলাইনে ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারেন অথবা সরাসরি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে আবেদনপত্র জমা দিতে পারেন। আবেদনপত্রে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, আর্থিক তথ্য, এবং ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে।

৪) ডকুমেন্ট যাচাই

আপনার আবেদন জমা দেওয়ার পর ব্যাংক আপনার ডকুমেন্ট এবং ক্রেডিট স্কোর যাচাই করবে। এই প্রক্রিয়াটি কয়েক দিন সময় নিতে পারে।

৫) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু

যদি আপনার আবেদন সফলভাবে অনুমোদিত হয়, তবে ব্যাংক আপনার নামে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করবে। এটি সাধারণত আপনার ঠিকানায় পোস্টের মাধ্যমে পাঠানো হবে, অথবা আপনাকে সরাসরি ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করতে হতে পারে।

কোন ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড এপলাই করতে পারবেন

 ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ইসলামী ব্যাংক তাদের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে ইসলামিক শরিয়া অনুযায়ী। এজন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন হয়:

  • বয়স: ২১-৬০ বছর
  • মাসিক আয়: সর্বনিম্ন ৩০,০০০ টাকা
  • নিয়মিত আয়ের উৎস থাকতে হবে
  • সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবী বা ব্যবসায়ী হতে হবে

ডাচ বাংলা ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ডাচ-বাংলা ব্যাংক একটি স্বনামধন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান যারা সাধারণ এবং প্রিমিয়াম ক্রেডিট কার্ড অফার করে। এর জন্য:

  • বয়স: ২১-৬৫ বছর
  • মাসিক আয়: সর্বনিম্ন ২০,০০০ টাকা
  • নিয়মিত চাকুরীজীবী বা ব্যবসায়ী হওয়া আবশ্যক
  • ক্রেডিট স্কোর ভালো হতে হবে

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ব্র্যাক ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে, যেমন প্রিমিয়াম এবং প্লাটিনাম কার্ড। এর জন্য শর্তাবলি:

  • বয়স: ২১-৬৫ বছর
  • মাসিক আয়: ২৫,০০০ টাকার উপরে
  • চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ী বা ফ্রিল্যান্সার হতে হবে
  • আয়ের প্রমাণ হিসেবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন

ট্রাস্ট ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ট্রাস্ট ব্যাংক, বিশেষত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য, ক্রেডিট কার্ড অফার করে। সাধারণত এর যোগ্যতা নিম্নরূপ:

  • বয়স: ২১-৬০ বছর
  • আয়: ৩০,০০০ টাকা বা তার বেশি
  • স্থায়ী চাকরি থাকা বাধ্যতামূলক

সোনালী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড

সোনালী ব্যাংক একটি সরকারি ব্যাংক, যারা সল্প সুদে ক্রেডিট কার্ড অফার করে। এর জন্য:

  • বয়স: ২১-৬৫ বছর
  • আয়: ২০,০০০ টাকার উপরে
  • সরকারি চাকুরিজীবী বা ব্যবসায়ী হওয়া আবশ্যক
  • অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সহজ প্রক্রিয়ায় আবেদন গ্রহণ করে

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

সিটি ব্যাংক তাদের Amex ক্রেডিট কার্ডের জন্য বিখ্যাত। সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে:

  • বয়স: ২১-৬০ বছর
  • মাসিক আয়: ৩০,০০০ টাকার উপরে
  • নিয়মিত চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী হতে হবে
  • নির্ভরযোগ্য ক্রেডিট স্কোর থাকা প্রয়োজন

ক্রেডিট কার্ড খরচ

প্রতিটি ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে কিছু খরচ হয়। সাধারণ খরচগুলো হলো:

  • প্রথমবার ইস্যু ফি: ব্যাংক থেকে কার্ড নেওয়ার সময় একবার ইস্যু ফি দিতে হয়।
  • বার্ষিক ফি: বেশিরভাগ ব্যাংক প্রতি বছর ক্রেডিট কার্ড রাখার জন্য একটি বার্ষিক ফি ধার্য করে।
  • সুদ হার: নির্দিষ্ট সময়ের পরে বিল পরিশোধ না করলে সুদ হিসেবে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়, যা সাধারণত ২০-৩০% হতে পারে।
  • লেট ফি: সময়মতো বিল পরিশোধ না করলে অতিরিক্ত ফি দিতে হয়।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে করণীয়

  • কার্ড ব্যবহারের পর সময়মতো বিল পরিশোধ করুন, যাতে আপনাকে অতিরিক্ত সুদ দিতে না হয়।
  • কার্ডের লিমিটের চেয়ে বেশি খরচ করবেন না।
  • আপনার ক্রেডিট স্কোর ভালো রাখতে নিয়মিত সময়মতো পেমেন্ট করতে হবে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার সহজ এবং সুবিধাজনক হলেও, এটি দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো বিল পরিশোধ করলে আপনি আর্থিকভাবে সুরক্ষিত থাকবেন এবং ভবিষ্যতে আরো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

প্রশ্ন: ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য কতটা আয়ের প্রয়োজন?

উত্তর: এটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে। সাধারণত মাসিক আয়ের একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকতে হয়, যা ব্যাংক নির্ধারণ করে।

প্রশ্ন: আমি কি শিক্ষার্থী হিসেবে ক্রেডিট কার্ড বানাতে পারি?

উত্তর: কিছু ব্যাংক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ধরনের ক্রেডিট কার্ড অফার করে, যেখানে আয়ের প্রয়োজনীয়তা শিথিল থাকে। তবে এর জন্য গ্যারান্টার বা সিকিউরিটি ডিপোজিট লাগতে পারে।

প্রশ্ন: বিল পরিশোধ না করলে কী হবে?

উত্তর: বিল পরিশোধ না করলে আপনাকে অতিরিক্ত সুদ দিতে হবে এবং আপনার ক্রেডিট স্কোর খারাপ হতে পারে, যা ভবিষ্যতে ঋণ পেতে সমস্যা সৃষ্টি করবে।

Sunday, October 6, 2024

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কি? What is Genetic Engineering

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কি? What is Genetic Engineering

আমরা জানি, প্রতিটি জীবদেহ অসংখ্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোষ ক্রোমোজম 'নিউক্লিয়াস দিয়ে গঠিত। প্রত্যেকটি কোষের মাঝে থাকে ক্রোমোজোম (Chromosome), যেগুলো তৈরি হয় ডিএনএ (DNA: Deoxyribo Nucleic Acid) ডাবল হেলিক্স দিয়ে। এই ডিএনএ'র ভেতর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ সেই প্রাণীর জীবনের বৈশিষ্ট্যকে বহন করে এবং সেগুলো জিন (Gene) হিসেবে পরিচিত।

জিনোম কাকে বলে

একটি ক্রোমোজোমে অসংখ্য জিন থাকতে পারে, মানবদেহে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার জিন রয়েছে। এ ধরনের এক সেট জিনকে জিনোম বলা হয়।


জিনোম হলো জীবের বৈশিষ্ট্যের নকশা বা বিন্যাস। জিনোম সিকোয়েন্স দিয়ে বোঝায় কোষের সম্পূর্ণ ডিএনএ বিন্যাসের ক্রম; জিনোম যত দীর্ঘ হবে, তার ধারণ করা তথ্যও তত বেশি হবে। জিনোমের উপর নির্ভর করে ঐ প্রাণী বা উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য কীরূপ হবে। যেহেতু একটি জিন হচ্ছে একটি প্রাণীর বৈশিষ্ট্যের বাহক, তাই কোনো প্রাণীর জিনোমের কোনো একটি জিনকে পরিবর্তন করে সেই প্রাণীর কোনো একটি বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করা সম্ভব।

যেহেতু জিনগুলো আসলে ডিএনএ'র একটি অংশ, তাই একটা জিনকে পরিবর্তন করতে হলে ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ'র সেই অংশটুকু কেটে আলাদা করে অন্য কোনো প্রাণী বা ব্যাকটেরিয়া থেকে আরেকটি জিন কেটে এনে সেখানে লাগিয়ে দিতে হয়।

গবেষণার মাধ্যমে যখন একটি জিন পরিবর্তন করে সেখানে অন্য জিন লাগানো হয় তাকে বলা হয় রিকম্বিনেট ডিএনএ বা RDNA। এসব RDNA সমৃদ্ধ জীবকোষকে বলা হয় Genetically Modified ওরগানিস্ম(GMO)।

জিন জোড়া লাগানো বা রিকম্বিনেট ডিএনএ বা আরডিএনএ সত্যিকার অর্থে কী কাজে যথার্থভাবে ব্যবহার করা যায় সেটি বের করার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত গবেষণা করে যাচ্ছেন। বস্তুত জীবপ্রযুক্তির এই অত্যাধুনিক শাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে, কোনো জীবের নতুন ও কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে ঐ জীবের জিন পৃথক করে অন্য জীবের জিনের সাথে সংযুক্ত করে নতুন জিন বা ডিএনএ তৈরি করা।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সংজ্ঞা

তাই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সংজ্ঞা হিসেবে আমরা বলতে পারি, জীবদেহে জিনোমকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজিয়ে কিংবা একাধিক জীবের জিনোমকে জোড়া লাগিয়ে নতুন জীবকোষ সৃষ্টির কৌশলই হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। উচ্চফলনশীল জাতের ধান ও অন্যান্য ফসল এবং প্রাণীর জিনের সাথে সাধারণ জিন জোড়া লাগিয়ে নতুন ধরনের আরো উচ্চফলনশীল বা হাইব্রিড জাতের শস্য, প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ উৎপাদিত হয়েছে। এটিই সহজ ভাষায়, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা

বিশ্বের অনেক দেশেরই জনসংখ্যার তুলনায় খাদ্য ঘাটতি একটি সাধারণ সমস্যা, যার জন্য খাদ্য আমদানি করতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। এই সমস্যা সমাধানে বর্তমানে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রয়োগ করে বহুগুণে খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এই বিষয়টি হাইব্রিড নামে বহুল পরিচিত। প্রাণীর আকার এবং মাংসবৃদ্ধি, দুধে আমিষের পরিমাণ বাড়ানো এইধরনের কাজ করেও খাদ্য সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

কৌশলগতভাবে পরিবর্তিত E.Coli ব্যাকটেরিয়া এবং ইস্ট হতে মানবদেহের ইনসুলিন তৈরি, হরমোন বৃদ্ধি, এবং বামনত্ব, ভাইরাসজনিত রোগ, ক্যান্সার, এইডস ইত্যাদির চিকিৎসায় জিন প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে জিন স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য অল্প সময়ে সুচারুরূপে স্থানান্তর করা সম্ভব হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট উদ্ভাবক বা উদ্যোক্তাগণের নিকট প্রচলিত প্রজননের তুলনায় এ প্রযুক্তিটি অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।

আমাদের দেশেও এ প্রযুক্তির উপর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, আখ গবেষণা ইনস্টিটিউট ইত্যাদি বেশ কিছু সংস্থা কাজ করে অনেক উচ্চফলনশীল জাতের শস্যবীজ উৎপাদন করেছে। এসব বীজ ব্যবহার করে শস্যও কয়েকগুণ বেশি হারে উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরই আমাদের দেশে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উচ্চ ফলনশীল ব্রি (BRRI) জাতের বহু ভ্যারাইটির ধানের বীজ উদ্ভাবন করেছে। এই ইনিষ্টিটিউটে উদ্ভাবিত পার্পল কালার (বেগুনি রঙের)-এর উফশী ধান দেশ-বিদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

সম্প্রতি পাটের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার করেও আমাদের দেশের সোনালি আঁশকে বিশ্বের দরবারে হারানো ঐতিহ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে। এ ছাড়াও ভুট্টা, ধান, তুলা, টমেটো, পেঁপেসহ অসংখ্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানো, আগাছা সহিষ্ণু করা, পোকামাকড় প্রতিরোধী করা এবং বিভিন্ন জাতের মৎস্য সম্পদ (বিশেষত মাগুর, কার্প, তেলাপিয়া ইত্যাদি) বৃদ্ধির জন্য জিন প্রকৌশলকে কাজে লাগানো হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বহুমাত্রিক ব্যবহারের পাশাপাশি এর কিছু বিরূপ প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তার মাঝে উল্লেখযোগ্যগুলো হচ্ছ, জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণে জীবজগতে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি, অনৈতিক বা অযাচিতভাবে জিনের স্থানান্তর, মানবদেহে প্রয়োগযোগ্য এন্টিবায়োটিক ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস ও অ্যালার্জির উদ্ভব কিংবা ভয়াবহ ও জীববিধ্বংসী প্রজাতি বা ভাইরাস উদ্ভবের আশঙ্কা ইত্যাদি।

Saturday, January 6, 2024

ব্যান্ডউইথ কি? What is Bandwidth

ব্যান্ডউইথ কি? What is Bandwidth

বর্তমান বিশ্বে আমাদের সবারই কম-বেশি ইন্টারনেট এবং তার গতি বা স্পিড সম্পর্কে একটি ধারণা আছে। এই 'ইন্টারনেট' -এর গতি বা স্পিড তার ব্যান্ডউইথের উপর নির্ভরশীল। প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ ডেটা এক স্থান হতে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় তাকে অর্থাৎ ডেটা স্থানান্তরের হারকে ব্যান্ডউইথ বলে।

ব্যান্ডউইথ সাধারণত bit per second (bps) -এ হিসাব করা হয়। তবে ইদানীং নেটওয়ার্কে অনেক বেশি ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায় বলে বিপিএস (bps) - এর পরিবর্তে কেবিপিএস (kbps: প্রতি সেকেন্ডে এক হাজার বিট) বা এমবিপিএস (Mbps: প্রতি সেকেন্ডে এক মিলিয়ন বিট) এমনকি জিবিপিএস (Gbps: প্রতি সেকেন্ডে এক বিলিয়ন বিট) অনেক বেশি ব্যবহৃত হয়। আট বিটকে এক বাইট বলা হয় বলে এক MBps বলতে আট Mbps বোঝানো হয়।

ব্যান্ডউইথ কি কাজে লাগে

একটি কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইথ সেখানে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং মিডিয়মের উপর নির্ভর করে। যেমন মিডিয়ম হিসেবে সাধারণ টেলিফোনের তার ব্যবহার করলে যত ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়, ফাইবার অপটিক ক্যাবলে তার থেকে অনেক গুণ বেশি পাওয়া যায়। আবার ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সাথে যদি যথাযথ স্পীডের টারমিনাল ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা না হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথ পাওয়া সম্ভব হয় না।

ব্যান্ডউইথ কি

একটি কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক যেহেতু অনেকে ব্যবহার করে তাই নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইথ সকল ব্যবহারকারীর মাঝে ভাগ হয়ে যায়। অনেক সময় একজন ব্যবহারকারী কিংবা একটি সার্ভিস ব্যান্ডউইথের একটা বড় অংশ দখল করে অন্যদের শেয়ার কমিয়ে দেয়। একটি নেটওয়ার্কে একজন ব্যবহারকারী কতটুকু প্রকৃত ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে সেটি মাপার নানা ধরনের পদ্ধতি রয়েছে, নেটওয়ার্কের ডিজাইনে কিংবা যন্ত্রপাতিতে কোনো সমস্যা থাকলে সেগুলো বের করা সম্ভব। সে কারণে ব্যান্ডউইথ ম্যানেজমেন্ট বর্তমান সময়ে অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ।

উপরের ছবিতে বিভিন্ন সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। কাজেই একজন ব্যবহারকারীর যদি নির্দিষ্ট একটি সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথ না থাকে তাহলে তার পক্ষে সেই সার্ভিসটি সঠিকভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হয় না।

Wednesday, January 3, 2024

মহাকাশ অভিযান কি? Space Exploration

মহাকাশ অভিযান কি? Space Exploration

মহাকাশচারীসহ কিংবা মহাকাশচারী ছাড়াই কোনো মহাকাশযান যখন পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাঁধন কাটিয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে কমপক্ষে একশত কিলোমিটার উপরে বায়ুমণ্ডলের বাইরে যায় আমরা সেটাকে মহাকাশ অভিযান বলে থাকি। মহাকাশ অভিযানের কয়েকটি মাইল ফলকের মাঝে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো, ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবরে মহাকাশে প্রথম উপগ্রহ স্পুটনিক উৎক্ষেপণ, ১৯৬১ সালের ২ এপ্রিল প্রথম মানুষ, য়ুরি গ্যাগারিনের মহাকাশ অভিযান, ২০ জুলাই ১৯৬৯ প্রথম মানুষের চাঁদে অবতরণ, ২ ডিসেম্বর ১৯৭১ প্রথম মঙ্গল গ্রহে মার্স-৩-এর অবতরণ এবং ১২ এপ্রিল ১৯৮১ প্রথম স্পেস শাটল উৎক্ষেপণ। এর ভেতর চাঁদে অবতরণ এবং স্পেস শাটলের উৎক্ষেপণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, অন্যগুলো ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের।

মহাকাশ অভিযান

মহাকাশ অভিযান করার জন্য একটি মহাকাশযানকে ঘণ্টায় প্রায় তিরিশ হাজার মাইল গতিবেগ অর্জন করতে হয় যেটি শব্দের গতিবেগ থেকে প্রায় আটগুণ বেশি। এর জন্য একাধিক রকেটকে নিখুঁতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। মহাকাশচারীসহ একটি মহাকাশযানকে আবার পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে হলে এই প্রচণ্ড গতিবেগে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় বাতাসের ঘর্ষণে সৃষ্ট তাপকে বিকিরণ করে তার গতিবেগ আবার সহনশীল পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে হয়।


এই পুরো প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিজ্ঞানীদের দীর্ঘকাল গবেষণা করতে হয়েছে। মহাকাশযানের গতিপথ বের করার জন্য, তার অসংখ্য যন্ত্রপাতি নিখুঁতভাবে পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এবং সর্বক্ষণ পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর পুরোপুরি নির্ভর করতে হয়। 

মহাকাশ প্রযুক্তির বিকাশ হওয়ার পর অসংখ্য স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য একধরনের স্যাটেলাইটকে বলে জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট। এই স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ৩৪০০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর ঘূর্ণনের সাথে মিল রেখে হুবহু একই গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, তাই জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটকে পৃথিবী থেকে আকাশে একজায়গায় স্থির হয়ে আছে বলে মনে হয়। টেলিকমিউনিকেশনে ব্যবহার করার জন্য এটি প্রথম আবশ্যকীয় শর্ত। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু-১ নামে যে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে স্থাপন করে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিকানা অর্জন করেছে, সেটি একটি জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট।

স্যাটেলাইট

বর্তমান বিশ্বে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি প্রযুক্তি। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সরাসরি স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করি। আমাদের স্মার্টফোনে যে জিপিএস (GPS: Global Positioning System) আছে, সেগুলো অসংখ্য স্যাটেলাইটের সিগনাল ব্যবহার করে কাজ করে। যখন আমরা টেলিভিশনে কোনো অনুষ্ঠান দেখি সেগুলো অনেক সময় স্যাটেলাইট থেকে সম্প্রচার করা হয়। আমরা যখন দূর দেশে কথা বলি অনেক সময়েই সেই কথাগুলো স্যাটেলাইটের ভেতর দিয়ে সেখানে যায়। যখন সমুদ্রে নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়, আবহাওয়া স্যাটেলাইট তার নিখুঁত ছবি তুলে আমাদের সতর্ক করে দেয়। মহাকাশ গবেষণায় স্যাটেলাইট অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে, হাবল টেলিস্কোপে তোলা গ্রহ-নক্ষত্রের ছবি বিজ্ঞানের জগতে নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করেছে।
তবে মহাকাশ অভিযানে প্রযুক্তিগত সমস্যা ছাড়াও মনুষ্য সৃষ্ট সমস্যাও আছে, যেমন মহাকাশে বিভিন্ন উচ্চতায় অসংখ্য পরিত্যক্ত এবং অকেজো মহাকাশযান কিংবা তাদের ভগ্নাংশ অচিন্তনীয় গতিবেগে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে যাচ্ছে। সেগুলোর সঙ্গে অন্য মহাকাশযানের সংঘর্ষের আশঙ্কা এখন একটি বাস্তব সমস্যা। মহাকাশ অভিযান যে এখন শুধু মানুষের কল্যাণের জন্য করা হয় সেটিও সত্যি নয়। অনেক দেশই নানা ধরনের গোপন সামরিক তথ্য সংগ্রহের জন্য স্যাটেলাইটগুলো ব্যবহার করে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবাজ দেশগুলো মহাকাশভিত্তিক সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে, যেটি সমস্ত পৃথিবীকে একটি বড় বিপদের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে নিম্নল্লিখিত সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে:

১. ডিশ সার্ভিস চালু হওয়ার মাধ্যমে টিভি চ্যানেলগুলোকে আর বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া করতে হবে না।

২. এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশের কাছাকাছি অন্য অনেক দেশকে কভার করবে, কাজেই সেই দেশগুলোও বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে প্রয়োজনীয় সেবা কিনতে পারবে।

৩. দেশের ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত এলাকা যেমন- দুর্গম পার্বত্য ও হাওড় অঞ্চলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন ব্যাংকিং, টেলিমেডিসিন, দূরনিয়ন্ত্রিত শিক্ষা কার্যক্রমসহ নানাবিধ সেবা গ্রহণে সক্ষম হবেন।

৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে বিপর্যয় ঘটলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সার্বিক যোগাযোগ চালু রাখা সম্ভব হবে।

৫. এছাড়াও এই স্যাটেলাইটে স্থাপিত অত্যাধুনিক ক্যামেরার মতো সূক্ষ্ম প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের অনেক মূল্যবান তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারবে।

Monday, January 1, 2024

কম্পিউটার নেটওয়ার্কিংয়ের উদ্দেশ্য Objectives of Computer Networking

কম্পিউটার নেটওয়ার্কিংয়ের উদ্দেশ্য Objectives of Computer Networking

দুই বা ততোধিক কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরির প্রধান উদ্দেশ্য হলো কম্পিউটারসমূহের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার রিসোর্স শেয়ার করা এবং একসাথে কাজ করা। নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত কোনো কম্পিউটারের জন্য 'রিসোর্স' হচ্ছে অন্য কম্পিউটারের এমন কোনো উপাদান বা সুবিধা যা তার কাছে নেই।

যে কোনো কম্পিউটারের তথ্য কিংবা উপাদানগত সীমাবদ্ধতা এড়ানোর জন্য রিসোর্স শেয়ার করে কাজের সূক্ষ্মতা, গতি এবং ক্ষেত্র বা পরিধি অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়া যায়। তাই কম্পিউটার নেটওয়ার্কিংয়ের মূল উদ্দেশ্যই হলো, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির সর্বোত্তম ব্যবহার ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে তথ্য এবং রিসোর্সসমূহ ব্যাপক সংখ্যক ব্যবহারকারীর কাছে সহজলভ্য করা। রিসোর্স শেয়ার বলতে যা বোঝানো হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-

ইনফরমেশন রিসোর্স শেয়ার

যে কোনো বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের ইনফরমেশন পাওয়ার জন্য এখন সবাই ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট সার্চ করে। কিংবা একই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখার মধ্যে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিংয়ের দ্বারা তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য আদান-প্রদান করে দ্রুত ও সহজে কাজ সম্পাদন করা যায়।

সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ার 

নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ার করা যায়। এক্ষেত্রে একটি সফটওয়্যারই যদি নেটওয়ার্কভুক্ত সকল কম্পিউটারকে ব্যবহার করতে দেয়া হয় তবে একাধিক সফটওয়্যার ক্রয় না করে একটি সফটওয়্যার সবাই তা ব্যবহার করতে পারে। বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা লেনদেনের জন্য যে ভিন্ন ভিন্ন কাউন্টারে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেখা যায় তা মূলত একটি সফটওয়্যারকেই সকলে শেয়ার করে থাকে। এতে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দিক দিয়ে ব্যাপক সাশ্রয় ঘটে।

হার্ডওয়্যার রিসোর্স শেয়ার

বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক, কম্পিউটার ল্যাব, সাইবার ক্যাফেতে আমরা দেখতে পাই যে অনেক কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সুবিধা দ্বারা শুধু একটি প্রিন্টার সবাই ব্যবহার করছেন। এখানে মূলত প্রিন্টারটি সংযুক্ত থাকে সার্ভার কম্পিউটারে। অন্য কম্পিউটারগুলো (যাদেরকে ক্লায়েন্ট বা ওয়ার্কস্টেশন বলা হয়) নেটওয়ার্কভুক্ত থাকার কারণে সার্ভারের প্রিন্টারটি শেয়ার করতে পারে। আর এতে করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সাশ্রয় ঘটছে।

Sunday, December 31, 2023

ক্লাউড কম্পিউটিং কী | Cloud Computing

ক্লাউড কম্পিউটিং কী | Cloud Computing

আমরা সবাই জানি, তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতার দরুন আজকের যুগে আমরা নিজের ঘরের কোণে বসে নিজস্ব ছোট্ট কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে একটি বিশালাকার কম্পিউটারকে ভাড়ার মাধ্যমে যথেচ্ছা ব্যবহার করতে পারি এবং আমাদের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সেই কম্পিউটারে সংরক্ষণও করতে পারি। এই বিশালাকার কম্পিউটারের ধারণাটিই ক্লাউড কম্পিউটিং।

আজকের এই আর্টিকেলে "ক্লাউড কম্পিউটিং কী?" এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

{getToc} $title={Table of Contents}

ক্লাউড কম্পিউটিং কি

আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিগত সবকিছুই চলছে এই ক্লাউড কম্পিউটিং ধারণার উপর ভিত্তি করে। 'ক্লাউড' শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে যে কোনো ব্যবহারকারী পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সুবিশাল তথ্যভান্ডার দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার এবং সংরক্ষণ করতে পারেন। 

Cloud Computing

আমরা বর্তমানে যারা কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাদের প্রায় সবারই Facebook, E- mail বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্ট রয়েছে। আমরা ইচ্ছানুযায়ী এসব একাউন্টের মাধ্যমে স্টেটাস দিচ্ছি কিংবা মেইল আদান-প্রদান করে থাকি। এসব সেবা গ্রহণের জন্য আমাদেরকে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না। কেননা, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এইসব সার্ভিস বা সেবা প্রদানকারী বেশকিছু কোম্পানীর বিপলু সংখ্যক সার্ভার রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা অসংখ্য ক্লায়েন্টকে একই সময়ে সার্ভিস প্রদান করে যাচ্ছেন। আবার কিছু সংখ্যক সার্ভিস রয়েছে যেগুলো অর্থের বিনিময়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা দান করে থাকেন।

ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস

বিনামূল্যের এবং অর্থের বিনিময়ে উভয় প্রকার সার্ভিস ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের অন্তর্গত। এক্ষেত্রে কম্পিউটার রিসোর্স যেমন- হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, নেটওয়ার্ক ইত্যাদি সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে থাকে, ক্রেতা বা ব্যবহারকারী নিজস্ব কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্ভিসদাতা সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে প্রয়োজনীয় কম্পিউটিংয়ের কাজ সমাধা করে থাকে। ক্লাউড কম্পিউটিংকে কোনো সুনির্দিষ্ট টেকনোলজি হিসেবে গণ্য করা হয় না, এটি মূলত একটি ব্যবসায়িক মডেল, যার দ্বারা ব্যবহারকারী এবং সার্ভিস প্রদানকারী উভয়ই ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন।

ক্লাউড কম্পিউটিং পদ্ধতিকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

যথা-

১। প্রাইভেট ক্লাউড Private Cloud

একক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় কিংবা থার্ড পার্টির ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয় যাতে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, এ ধরনের ক্লাউডকে প্রাইভেট ক্লাউড বলে। এ সব পরিচালনা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, তবে অনেক বড়ো প্রতিষ্ঠানের অনেক শাখায় ডেটা সেন্টার না বসিয়ে একটিমাত্র ক্লাউড ডেটা সেন্টার স্থাপন করলে প্রতিষ্ঠানটির জন্য সাশ্রয়ী হয়।

২। পাবলিক ক্লাউড Public Cloud

জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ক্লাউডকে পাবলিক ক্লাউড বলে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত সকলের বিনামূল্যে বা স্বল্প ব্যয়ে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত অ্যাপ্লিকেশন, স্টোরেজ এবং অন্যান্য রিসোর্স ইত্যাদির সার্ভিসযুক্ত ক্লাউড-ই পাবলিক ক্লাউড। Amazon, Microsoft এবং Google ইত্যাদি তাদের নিজস্ব ডেটা সেন্টারে পাবলিক ক্লাউডের অবকাঠামো স্থাপন ও পরিচালনা করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস প্রদান করে থাকে।

হাইব্রিড ক্লাউড Hybrid Cloud

দুই বা ততোধিক ধরনের ক্লাউড (প্রাইভেট, পাবলিক বা কমিউনিটি) - এর সংমিশ্রণই হলো হাইব্রিড ক্লাউড। বিভিন্ন ধরনের ক্লাউড পৃথক বৈশিষ্ট্যের হলেও এক্ষেত্রে একই সাথে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে। ক্লাউড সার্ভিসের ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য একাধিক ক্লাউডকে একীভূত করা হয়ে থাকে।
ওয়াইম্যাক্স কি WiMax

ওয়াইম্যাক্স কি WiMax

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় ভিজিটর আজকের আর্টিকেলটি নেটওয়ার্ক প্রেমিদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা ইতিমধ্যে নেটওয়ার্কিং শিখছেন বা ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান অর্জন করতে চান তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি। আজকের আর্টিকেলে জানাবো- ওয়াই ম্যাক্স কি?, WiMax এর স্পিড কত?, wimax কি কাজে ব্যবহার হয়?, এবং WiMax কি?
ওয়াইম্যাক্স

ওয়াইম্যাক্স কোন ধরনের নেটওয়ার্ক

এটি দ্রুতগতির একটি যোগাযোগ প্রযুক্তি যেটি প্রচলিত DSL (Digital Subscriber Line) এবং তারযুক্ত ইন্টারনেটের পরিবর্তে ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সুবিধা দিয়ে থাকে। Worldwide Interoperability for Microwave Access -এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে WiMax

এটি সাধারণত 2 থেকে 66 Ghz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং 80 Mbps থেকে 1Gbps পর্যন্ত গতিতে ডেটা ট্রান্সফার রেট প্রদানে সক্ষম।

WiMax এর প্রধান অংশ দুটি:

১। বেস স্টেশন, যেটি ইনডোর ডিভাইস এবং
আউটডোর টাওয়ার নিয়ে গঠিত। প্রতিটি বেস স্টেশনের কভারেজ এরিয়া 50 থেকে 80 km পর্যন্ত হয়ে থাকে।
২। অ্যান্টেনাযুক্ত WiMax রিসিভার, যা কম্পিউটারে সংযুক্ত করা হয় যেটি ওয়্যারলেস নির্ভর হওয়ায় পরিবহনযোগ্য।

এই প্রযুক্তিতে একটি একক বেস স্টেশনের মাধ্যমে বিশাল ভৌগোলিক এলাকায় হাজার হাজার ব্যবহারকারীকে ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া যায়। ওয়্যারলেস হওয়ায় পোর্টেবলিটির সুবিধা পাওয়া যায় এবং এর রিসিভার সহজে বহনযোগ্য। বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসের মাধ্যমে শহর এবং গ্রামে পোর্টেবল ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রদান করে।

ওয়াইম্যাক্স এর স্ট্যান্ডার্ড কত

WiMax নেটওয়ার্ক ব্যবহারের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। অনেক বিস্তৃত নেটওয়ার্ক হওয়ায় অন্যান্য নেটওয়ার্কের তুলনায় এটি ব্যয়বহুল এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি।
Bluetooth, Wi-Fi এবং WiMax -এই তিনটি ওয়্যারলেস প্রযুক্তির তুলনামূলক কার্যকারিতার ছক দেওয়া হলো:

আরো পড়ুন
জানানোর চেষ্টা করলাম "WiMax" সম্পর্কে😊

Friday, December 29, 2023

গবেষণা কি? What is Research

গবেষণা কি? What is Research

যে প্রক্রিয়ায় সৃষ্টিশীল মেধা-মনন প্রয়োগ করে পৃথিবীর জ্ঞানভান্ডার বৃদ্ধি বা সমৃদ্ধ করা হয় সেটিই হচ্ছে গবেষণা। উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো গবেষণা। নিয়মিত জ্ঞানচর্চা বা বিজ্ঞানসম্মত অধ্যয়ন গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত। উন্নতকামী দেশ মাত্রই গবেষণার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকে। তাই বিশ্বগ্রাম ধারণায় গবেষণা একটি প্রধান অনুষঙ্গ এবং সেজন্য এখানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিসীম।

গবেষণা কি? 

বর্তমান পৃথিবীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া বিজ্ঞানী বা গবেষকেরা গবেষণার কথা চিন্তাও করতে পারেন না। তথ্য ও উপাত্তের সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়া, জটিল হিসাব, সিমুলেশন কিংবা যন্ত্রপাতি পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ, সেগুলো থেকে ডেটা সংগ্রহ এর প্রতিটি ধাপেই তথ্য প্রযুক্তি বড় ভূমিকা রেখে থাকে। বিজ্ঞানী বা গবেষকেরা তাঁদের চিন্তাধারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে একে অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারেন, আলোচনা করতে পারেন কিংবা নিরবচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছেন। শারীরিকভাবে উপস্থিত না থেকেও একজন গবেষক সেমিনার বা কনফারেন্সে নিজের গবেষণা প্রকাশ করতে পারেন কিংবা অন্যের গবেষণা সম্পর্কে জানতে পারেন।
একসময় জার্নাল বা গবেষণাপত্র, প্যাটেন্ট ইত্যাদি অত্যন্ত দুর্লভ বিষয় ছিল, এবং সেটি ছিল গবেষণার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। আজকাল প্রায় সব জার্নাল ই-জার্নাল হিসেবে প্রকাশিত হয় এবং প্যাটেন্টের বিশাল ডেটাবেসের অনেকটুকুই উন্মুক্ত, কাজের যে কোনো গবেষক সেই বিশাল তথ্যভান্ডার ব্যবহার করতে পারেন। সে কারণে আমরা দেখতে পাই সীমিত সম্পদ নিয়েও আমাদের দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বমানের গবেষণা করতে পারে।

গবেষণার বিষয়বস্তু নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা ব্লগে প্রকাশিত হলে গবেষণার কার্যক্রম আরো গতিশীল ও ত্বরান্বিত হয়। বিজ্ঞানী বা গবেষকদের গবেষণালব্ধ ফলাফল, তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা যাচাই এবং সমগ্র বিশ্বের সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিবর্গের নিকট দ্রুততার সাথে প্রচার এবং সেগুলোর উপর পর্যবেক্ষণ, মতামত প্রদান ইত্যাদি প্রতিটি বিষয় বিশ্বগ্রাম ধারণার মাধ্যমে বাস্তবায়ন অত্যন্ত সহজসাধ্য হয়েছে।

গবেষণা সম্পর্কে আরো তথ্য পেতে এখানে ক্লিক করুন
ইতিহাস সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন
ধন্যবাদ আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য, গবেষণা কি? গবেষণা বা রিসার্চ নিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল!

ক্রায়োসার্জারি কি? What is Cryosurgery

ক্রায়োসার্জারি কি? What is Cryosurgery

ক্রায়োসার্জারি একধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি যা অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগের মাধ্যমে অস্বাভাবিক বা অপ্রত্যাশিত রোগাক্রান্ত টিস্যু/ত্বক কোষ ধ্বংস করার কাজে ব্যবহৃত হয়। ক্রায়োসার্জারিতে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগ হয়ে থাকে।

এ পদ্ধতির চিকিৎসায় প্রথমেই সিম্যুলেটেড সফটওয়্যার দ্বারা ক্যান্সার ইত্যাদিতে আক্রান্ত কোষগুলোর অবস্থান ও সীমানা নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে রোগাক্রান্ত কোষটিতে আইসিটি যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রিত মাইক্রো-ক্যামেরাযুক্ত নল দিয়ে ক্ষতস্থান শনাক্ত করা হয় এবং অত্যন্ত সূক্ষ্ম সুচযুক্ত ক্রায়োপ্রোব প্রবেশ করিয়ে নির্ধারিত ক্রায়োজনিক গ্যাস প্রয়োগ করা হয়।

তাপমাত্রা অত্যধিক হ্রাস পেয়ে -41 থেকে -196 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নেমে আসার কারণে নির্বাচিত টিস্যুটিতে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ঐ নিম্নতম তাপমাত্রায় রক্ত ও অক্সিজেন সঞ্চালন সম্ভব না হওয়ার দরুন রোগাক্রান্ত টিউমার টিস্যুর ক্ষতিসাধন হয়। ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসায় টিউমারের ধরন অনুযায়ী এবং নির্দিষ্ট শীতলতায় পৌঁছানোর জন্য তরল নাইট্রোজেন, আর্গন, অক্সিজেন বা কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। এই তরল গ্যাসগুলো ক্রায়োজনিক এজেন্ট নামে পরিচিত।

ক্রায়োসার্জারিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা অনেক বেশি, যেমন আক্রান্ত কোষ বা টিস্যুর অবস্থান নির্ণয়ে এবং সমস্ত কার্যাবলী পর্যবেক্ষণের কাজে সারাক্ষণ কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ব্যবহৃত হয়। সেজন্য ক্রায়োসার্জারিতে চিকিৎসা ব্যবস্থায় অভিজ্ঞ করে তুলতে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়।

রোগীর তথ্য, চিকিৎসার গবেষণার ফলাফল ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার ডেটাবেজ সিস্টেম প্রয়োজন হয়। 

ক্রায়োসার্জারির অনেক সুবিধা রয়েছে। অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির তুলনায় ক্যান্সার ও নিউরোসার্জারি চিকিৎসায় ক্রায়োসার্জারি অনেক সাশ্রয়ী এবং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় কম লাগে। এ পদ্ধতিতে কোনো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, ব্যথা, রক্তপাত অথবা অপারেশনজনিত কাটা-ছেঁড়ার কোনো জটিলতা নেই।

রোগীকে কোনো পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হয় না এবং অনেকক্ষেত্রে সার্জারি শেষে রোগীকে হাসপাতালেও থাকতে হয় না। তবে আক্রান্ত কোষের সঠিক অবস্থান নির্ণয়ে ব্যর্থ হলে ক্রায়োসার্জারি ব্যবহারে জীবাণু শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে লিভার ও ফুসফুসের স্বাভাবিক গঠন বিনষ্ট কিংবা স্নায়বিক সমস্যার উদ্ভব হতে পারে।


রোবটিক্স কি? Robotics Ki

রোবটিক্স কি? Robotics Ki

আজকের আর্টিকেলটি টেকনলোজি প্রেমিদের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ আর্টিকেল। আজকের আর্টিকেলে জানাবো রোবটিক্স সম্পর্কে!

রোবোটিক্স কি?

রোবট শব্দটির সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত, এই শব্দটি দিয়ে আমরা এমন একধরনের যন্ত্রকে বোঝাই যেটি মানুষের কর্মকাণ্ডের অনুরূপ কর্মকাণ্ড করতে পারে। বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত যে বিষয়টি রোবটের ধারণা, নকশা, উৎপাদন, কার্যক্রম কিংবা ব্যবহার বাস্তবায়ন করতে পারে তাকে রোবটিক্স বলা হয়ে থাকে।

রোবট কত প্রকার

রোবট কথাটি বলা হলে যদিও সাধারণভাবে আমরা মানুষের আকৃতির একটি যন্ত্র কল্পনা করি, কিন্তু প্রকৃত রোবট তার কাজের উপর নির্ভর করে যে কোনো আকারের বা আকৃতির হতে পারে। আজ থেকে এক যুগ আগেও রোবটের মূল ব্যবহার গাড়ির ওয়েল্ডিং কিংবা স্ক্রু লাগানোর মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে রোবটের কার্যপরিধিও বেড়ে যেতে শুরু করেছে এবং এমন কোনো কাজ নেই যেখানে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে না।

রোবটিক্সের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেলেও তার গঠনে তিনটি নির্দিষ্ট বিশেষত্ব রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:
  1. একটি রোবট যে নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য তৈরি হয়, তার উপর নির্ভর করে একটি বিশেষ যান্ত্রিক গঠন হয়ে থাকে।
  2. রোবটের যান্ত্রিক কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকতে হয়।
  3. রোবটকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
রোবট শিল্প এখনো তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও এটি সাগরের গভীর থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত সব জায়গায়, যেখানে মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়, সেখানে কাজ করে যাচ্ছে।

রোবটের ব্যবহার  ব্যবহার (Application)

১. বিপজ্জনক কাজে

মানুষের পক্ষে যে সব কাজ অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ, যেমন সমুদ্রের তলদেশে, যে কোনো অনুসন্ধানী কাজে, মাইন ইত্যাদি বিস্ফোরক দ্রব্য নিষ্ক্রিয়করণে, নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রে, খনির অভ্যন্তরের কোনো কাজে, নদী-সমুদ্রের নিচে টানেল নির্মাণ ইত্যাদি কার্যক্রমে রোবট ব্যবহৃত হয়।

২. শিল্প-কারখানায়

শিল্পোৎপাদন কাজে, শিল্প-কারখানার ভারী বস্তু নড়াচড়া করানো, প্যাকিং, সংযোজন, পরিবহন ইত্যাদি শ্রমসাধ্য কাজ ছাড়াও কম্পিউটার এইডেড কাজে রোবটিক্স-এর ব্যবহার রয়েছে।

৩. সুক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কাজে

মাইক্রোসার্কিটের উপাদান পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষণ কাজ এবং ইলেকট্রনিক আইসি, প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড ইত্যাদির তৈরির জন্য রোবট ব্যবহৃত হয়।

৪. চিকিৎসা ক্ষেত্রে

সার্জারি, জীবাণুমুক্তকরণ, ওষুধ বিতরণ ইত্যাদি কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়।

৫. সামরিক ক্ষেত্রে

বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্তকরণ, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ, যুদ্ধক্ষেত্রে এবং অন্যান্য মিলিটারি অপারেশনে রোবট ব্যবহৃত হয়।

৬. শিক্ষা ও বিনোদনে

শারীরিকভাবে অসুস্থ, পঙ্গু বা অটিস্টিক শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থায় রোবটের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। শিশুদের চিত্তবিনোদনের ক্ষেত্রে খেলনা রোবট এবং মিডিয়া আর্টের ক্ষেত্রেও রোবট ব্যবহৃত হয়।

৭. নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ

নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার জন্য, অন্ধকারে কোনো আগন্তুককে পর্যবেক্ষণ করার জন্য, দুষ্কৃতকারী কিংবা বিপজ্জনক আসামীকে ধরার কাজে এবং পর্যবেক্ষণ ইত্যাদিতে পুলিশকে রোবট সহায়তা দিতে থাকে।

৮. মহাকাশ গবেষণা

মহাকাশ গবেষণায় মহাকাশে কিংবা অন্য গ্রহ-উপগ্রহ সম্পর্কিত নানাবিধ তথ্যানুসন্ধান ও বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য বা মহাকাশ যান প্রেরণ করার সময় ব্যাপকহারে রোবটের ব্যবহার আছে।

৯. ঘরোয়া কাজে

দৈনন্দিন ঘরোয়া কাজে, গৃহকর্মী হিসেবে নিত্যনৈমিত্তিক কার্যাদি সম্পাদনের জন্য রোবট ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ভবিষ্যতে রোবটের সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরো ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করে রোবটকে অনেক নতুন নতুন কাজে ব্যবহার করা হবে। 

Wednesday, December 27, 2023

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence)

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence)

চিন্তাশক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিশ্লেষণ ক্ষমতা মানুষের সহজাত, একটি যন্ত্রকে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা দিয়ে, সেটিকে চিন্তা করানো কিংবা বিশ্লেষণ করানোর ক্ষমতা দেওয়ার ধারণাটিকে সাধারণভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়। কিছুদিন আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ছিল দূর ভবিষ্যতের একটি কাল্পনিক বিষয়।

আজকের আর্টিকেলে থাকছেঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি,আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কিভাবে কাজ করে,আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স কি,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা মেশিন লার্নিং কি ?,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি,আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স: এআই,আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি?,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স hsc
{getToc} $title={এই পোস্টে যা যা থাকছে}

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হলো: চিন্তাশক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিশ্লেষণ ক্ষমতা মানুষের সহজাত, একটি যন্ত্রকে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা দিয়ে, সেটিকে চিন্তা করানো কিংবা বিশ্লেষণ করানোর ক্ষমতা দেওয়ার ধারণাটিকে সাধারণভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়। কিছুদিন আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ছিল দূর ভবিষ্যতের একটি কাল্পনিক বিষয়। কিন্তু অতি সম্প্রতি এই দূরবর্তী ভবিষ্যতের বিষয়টি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হতে শুরু করেছে। তার প্রধান কারণ, পৃথিবীর মানুষ ডিজিটাল বিশ্বে এমনভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে যে, হঠাৎ করে অচিন্তনীয় পরিমাণ ডেটা সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই ডেটাকে প্রক্রিয়া করার মতো ক্ষমতাশালী কম্পিউটার আমাদের হাতে চলে এসেছে।

What is AI

এই ডেটা বা তথ্যকে প্রক্রিয়া করার জন্য বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদরা এমন একটি পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন যেটি মানুষের মস্তিষ্কের মতো করে কাজ করে। সাধারণভাবে এটা নিউরাল নেট নামে পরিচিত। সহজভাবে বলা যায় এর একটি ইনপুট স্তর এবং আউটপুট স্তর রয়েছে যার মাঝখানের স্তরটি হচ্ছে 'লুক্কায়িত' স্তর (Hidden Layer)।

প্রথমে এই নিউরাল নেটকে ইনপুট এবং তার সাথে যুক্ত উদাহরণ আউটপুট ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, তখন "লুক্কায়িত” স্তরটি এমনভাবে পরিবর্তিত হতে থাকে যেন প্রশিক্ষণের জন্য দেওয়া ইনপুটের জন্য সত্যি আউটপুটটি পাওয়া যায়। একবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে গেলে এই নিউরাল নেটকে সম্পূর্ণ নতুন ইনপুট দিলেও সেটি তার জন্য সম্ভাব্য সঠিক আউটপুটটি দিতে পারবে। যত বেশি ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, নিউরাল নেটটি তত ভালো কাজ করবে।

Artificial Intelligence

একটি লুক্কায়িত স্তর না রেখে একাধিক স্তর দিয়ে এই নেটকে আরো অনেক 'বুদ্ধিমান' করা সম্ভব। তখন নেটটি নিজেই ডেটা ব্যবহার করে শিখে নিতে পারবে। এই প্রক্রিয়ার নাম 'ডিপ লার্নিং' এবং বলা যেতে পারে এটি সত্যিকারের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সবচেয়ে কাছাকাছি একটি প্রক্রিয়া।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কিভাবে তৈরি করা হয়? 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানত C/C++, Java, MATLAB, Python, SHRDLU, PROLOG, LISP, CLISP, R ইত্যাদি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করা হয়। কার্যকারিতা ও প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে ডেভে লপারগণ তাঁদের পছন্দসই প্রোগ্রাম ব্যবহার করে থাকেন।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সবচেয়ে সফল ক্ষেত্র হিসেবে মেশিন লার্নিংয়ের কথা বলা যায়। বর্তমান Reinforcement Learning গবেষণার মূল ভিত্তি হচ্ছে একটি যন্ত্রকে আলাদাভাবে কোনো কিছু শেখানো হবে না। মেশিনের সামনে উপস্থিত বিশাল পরিমাণ ডেটা থেকে একটি যন্ত্র নিজেই শিখে নেবে। প্রথম প্রথম সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হবে, কিন্তু ঠিক মানুষের মতোই যন্ত্র ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার

ইনপুট স্তর লুক্কায়িত স্তর আউটপুট স্তর আমরা আমাদের জীবদ্দশাতেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কিছু সফল প্রয়োগ দেখতে পাব, তার একটি হচ্ছে ড্রাইভারবিহীন স্বয়ংক্রিয় গাড়ি। আবহাওয়ার সফল ভবিষ্যৎবাণী আমরা ইতোমধ্যে দেখতে শুরু করেছি। এ ছাড়াও বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর এমন কোনো ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারিক প্রয়োগ নেই।

যেমন চিকিৎসাবিদ্যা, অটোমোবাইল, ফাইন্যান্স, সার্ভেইল্যান্স, সোশাল মিডিয়া, এন্টারটেনমেন্ট, শিক্ষা, স্পেস এক্সপ্লোরেশন, গেমিং, রোবটিক্স, কৃষি, ই- কমার্সসহ স্টক মার্কেটের শেয়ার লেনদেন, আইনি সমস্যার সম্ভাব্য সঠিক সমাধান, বিমান চালনা, যুদ্ধক্ষেত্র পরিচালনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার বর্তমানে পরিলক্ষিত হচ্ছে।




তথ্য সুত্র: ১১-১২ শ্রেণির তথ্য ও প্রযুক্তি বই থেকে সংগ্রহীত!