ইন্টারনেটের মত বিশাল একটা জিনিস যদি একজন মানুষ একা আবিষ্কার করতো আমরা সবাই তার নাম জানতাম এবং বিসিএস এ প্রতিবার তার নাম আসতো পরিক্ষার সময়। ইন্টারনেট আসলে একজন একা আবিষ্কার করেনি! তবে আবিষ্কারের ঘটনাটি বেশ মজার। ১৯০০ সালে নিকোলা টেসলা প্রথম একটা ধারনার কথা বলে। উনি বলেন পুরো দুনিয়াকে যদি তার ছাড়াই কানেক্ট করা যেতো একজন আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করতে পারতো তাহলে কেমন হতো? তার পরের ২০ থেকে ৩০ বছর এই নিয়ে অনেক রিসার্স হয় এবং ১৯৬০ সাল পর্যন্ত দেখানোর মত তেমন কোন রেজাল্ট আসেনি এই রিসার্স থেকে। ১৯৬০ সালের পরে দিকে একটা ভয়াবহ ব্যাপার ঘটে MID এর একজন প্রফেসর লিংক লিদার একটা আইডিয়ার ধারনা দেয়, যেই আইডিয়াটার নাম দেওয়া হয় Licklider's Intergalactic Computer Network. তখন কম্পিউটার সবাই চিনে গিয়েছিল। আর তখন মূল উদ্যেশ্য ছিলো একটার সাথে আরেকটার কিভাবে কানেক্ট করা যায়? তার কিছুদিন পরেই পেকেট সুইচিং নামে আরেকটা টেকনলজি আবিষ্কার হয়, যাতে করে খুব সহজেই ডেটা আদান প্রদানের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। যা আগে কোন ভাবেই করা সম্ভব ছিলোনা।
এইসব কিছুর উপর ভিত্তি করে এ্যমেরিকান আর্মি টাকা দিয়ে ১৯৬০ এর দশকে একটা রিসার্স হয় এবং বানানো হয় Advanced Resarch Project Agenecy Network বা সংক্ষেপে অর্পানেট বলা হয়। অর্পানেট প্রথম অনেক গুলো কম্পিউটার একসাথে করে একটা থেকে আরেকটা কম্পিউটারে ডেটা আদান প্রদান করে দেখায় এবং তাকেই প্রথন ইন্টারনেট বলা হয়। এই কাজটা মূলত করা হয় অক্টোবর ২৯শে ১৯৬৯ সালে। এবং এরপর স্ট্যানফোর্ড ল্যাব থেকে ইউসিএল এর একটি ল্যাবে ডেটা পাঠানো হয়। ২ টা কম্পিউটারের সাইজ ছিলো ছোট খাটো একটা এক তলা বাড়ির সমান।
মজার ব্যাপার হলো এই ডেটা কিন্তু পুরাটা যায়নি। একটা ম্যাসেজ পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। স্টানফোর্ড এর ল্যাব থেকে ইউসিএল এর ল্যাবে এবং ছোট্ট একটা ম্যাসেজ পাঠাতে গিয়ে সিস্টেমটা ক্রাশ করে। ক্রাশ করার আগে কিছু ল্যাটার চলে যায় যার মাধ্যমে প্রমানিত হয় 2টা কম্পিউটার আসলেই কানেক্টেড হয়েছে এবং একটা কম্পিউটার থেকে আরেকটা কম্পিউটারে ডেটা পাঠানো সম্ভব।
ঠিক অইদিনি ইন্টারনেট নামে একটা জিনিসের জন্ম হয়েছে। একটা আবিষ্কারের মধ্য দিয়েই পরের আবিষ্কার করার সুযোগ তৈরি হয়। এবং সব কিছু শেষে ইন্টারনেট বর্তমানে মানব জাতীর কাছে সেরা আবিষ্কার।